শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

গুরু জেলে, শিষ্যরা জাল টাকার কারিগর

প্রকাশিত: ০৫:১৩ এএম, অক্টোবর ২২, ২০২০

গুরু জেলে, শিষ্যরা জাল টাকার কারিগর

ডেইলি খবর ডেস্ক: জাল টাকা তৈরির দায়ে গুরু জেওে তাই শিষ্যরাই গুরুর কাজটি কর যাচ্ছে। ঘটনার বিবরনে জানা যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুরুজ্জামান বাংলাদেশে জাল টাকা ও জাল রুপি তৈরির হোতা হিসেবে পরিচিত। গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে সে কারাগারে। তবে তার শিষ্যরা থেমে নেই। তার অবর্তমানে তারাই এখন জাল টাকার কারখানা পরিচালনা করছে। এমনই তথ্য জানিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের একটি বাড়িতে জাল টাকার সন্ধান পায় ডিবি। জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও তা তৈরির সরঞ্জাম। গ্রেফতার হয় দুই মহিলাসহ চার জন। গ্রেফতাকৃতরা হলো হুমায়ুন কবির খান, মো: জামাল, সুখী আক্তার ও তাসলিমা আক্তার। ডিবি পুলিশ তাদের চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (গুলশান) মশিউর রহমান বলেন,গ্রেফতারকৃত হুমায়ুন কবির খান ও মো: জামাল একসময় দুরুজ্জামানের সহকারী ছিল। হুমায়ুনের বাড়ি পটুয়াখালীতে এবং জামালের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে। এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, দুরুজ্জামানই হলো জাল টাকা ও জাল রুপি তৈরির হোতা। ২০১৩ সালে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও তা তৈরির কাজে ব্যবহূত সরঞ্জামসহ গ্রেফতার হয় দুরুজ্জামান। বেশ কিছুদিন জেল খাটার পর জামিনে বেরিয়ে আবার শুরু করে জাল টাকার পাশাপাশি জাল রুপির কারবার। সর্বশেষ ২০১৯ সালে একই এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় জাল রুপি তৈরির পিতলের ডাইস। বর্তমানে দুরুজ্জামান কারাগারে। তবে তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর জাল টাকার কারবারিরা কিছুটা দমেছিল। সম্প্রতি দুরুজ্জামানের সহযোগীরা আবার জাল টাকার কারখানা চালু করে। তিনি বলেন, হুমায়ুন ও জামাল ২০০৮ সালের দিকে দুরুজ্জামানের কাছে জাল টাকা তৈরির কৌশল রপ্ত করে। এরপর নিজেই জাল টাকা তৈরির কারখানা চালু করে হুমায়ুন। জামাল শুরু থেকেই হুমায়ুনের তৈরি করা জাল টাকার ডিলার হিসেবে কাজ করে আসছে। এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত তাসলিমা আক্তারের স্বামী সাইফুল বেশ কয়েক মাস আগে জাল টাকাসহ গ্রেফতার হয়। অন্যদিকে সুখী আক্তার এই চক্রের নতুন সদস্য। সুমী আক্তারের বাড়ি ফরিদপুরে এবং তাসলিমা আক্তারের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে। তাদের অপর সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মশিউর রহমান বলেন, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪৯ লাখ ৫০ হাজার জাল টাকা। জাল টাকা তৈরির কাজে ব্যবহূত একটি ল্যাপটপ, দুটি প্রিন্টার, পাঁচটি স্ক্রিন প্রিন্ট দেওয়ার ফ্রেম, জাল নোট তৈরির জন্য ২ হাজার ৫০০ পিস সাদা কাগজ, ৯টি বিভিন্ন রঙের কালির কার্টিজ, সিকিউরিটি থ্রেড পেপারের রোল একটি, প্লাস্টিকের কালির কৌটা তিনটি ও অন্যান্য সামগ্রী। অভিযানে উদ্ধারকৃত সরঞ্জাম দিয়ে আনুমানিক পাঁচ কোটি জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব। মশিউর রহমান বলেন, চক্রটি দুর্গা পূজা সামনে রেখে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় জাল টাকা বিস্তারের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল।
Link copied!