শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

কোভিড-১৯: চীনে তৈরি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বাংলাদেশে

প্রকাশিত: ০২:৪৯ এএম, আগস্ট ২৮, ২০২০

কোভিড-১৯: চীনে তৈরি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বাংলাদেশে

ডেইলি খবর ডেস্ক: বাংলাদেশ এই ট্রায়ালে অংশ নিলে এক লাখ পিস টিকা সামগ্রী ফ্রি লাভ করার পাশাপাশি আরও প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভ্যাকসিন ক্রয় করতে অগ্রাধিকার পাবে বলে সরকার মনে করছে,' বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। চীনা কোম্পানি সাইয়নোভ্যাক বায়োটেক উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভ্যাকসিন ট্রায়াল ও তার অগ্রগতি সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে সংবাদকর্মীদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন ট্রায়ালে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন ট্রায়ালে ভারতসহ অন্য কোনো দেশ আগ্রহ দেখালে সরকার তার কার্যকারিতা যাচাই করে অনুমোদন দেবার ক্ষেত্রে আন্তরিক থাকবে। এর আগে চায়না কোম্পানি সায়নোভ্যাক দেশে ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অংশ নিতে আইসিডিডিআর,বি-এর মাধ্যমে যে আবেদন করেছিল, সেটির কার্যকারিতা নিয়ে সরকারের নানাবিধ বিশ্লেষণ শেষে চায়না কোম্পানিটিকে ভ্যাকসিন ট্রায়ালের অনুমোদন দেওয়া হলো। যত দ্রæত ভ্যাকসিন ট্রায়াল সম্পন্ন হবে, তত দ্রæত দেশ ভ্যাকসিন টিকা প্রাপ্ত হবে।' তিনি আরও বলেন, 'চায়নার এই কোম্পানিটি গত কয়েক মাস থেকেই আইসিডিডিআর,বি-এর মাধ্যমে ট্রায়ালের ব্যাপারে আমাদেরকে অনুরোধ করে আসছিল। সরকার তাদের ভ্যাকসিনের ব্যাপারে সব ধরনের যাচাই-বাছাই করেছে। কোম্পানিটি ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় ট্রায়াল শুরু করেছে। তুরস্কসহ বেশ কিছু দেশে ট্রায়াল শুরুর পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে। বাংলাদেশকে তারা (চায়না কোম্পানি) পছন্দের শীর্ষে রেখেছে শুরু থেকেই।'বাংলাদেশ এই ট্রায়ালে অংশ নিলে এক লাখ পিস টিকা সামগ্রী ফ্রি লাভ করার পাশাপাশি আরও প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভ্যাকসিন ক্রয় করতে অগ্রাধিকার পাবে বলে সরকার মনে করছে। তা ছাড়া চায়না সরকারের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনেক দৃঢ়। সবকিছু বিবেচনা করেই চায়না ভ্যাকসিন কোম্পানিটিকে ট্রায়ালে অংশ নেবার অনুমতি দেওয়া হয়েছে,' বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অন্য কোনো দেশের ট্রায়াল বাংলাদেশে হবে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বিশ্বের ৮টি কোম্পানি ভ্যাকসিন ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ট্রায়ালের আগ্রহ দেখালে বাংলাদেশ তা বিবেচনা করবে। ভ্যাকসিন ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আগ্রহ কতটুকু, এমন প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, 'বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়ের অনুপাতে কিছু ভ্যাকসিন ফ্রি পাবে। তবে সরকার কেবল ফ্রি ভ্যাকসিন পেতেই বসে থাকবে না। সরকার ভ্যাকসিন ক্রয়ের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই পিছিয়ে থাকবে না।' এর আগে, ওই ভ্যাকসিনের ফেজ-থ্রি ট্রায়ালের ব্যাপারে সম্মতি জানায় বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)। এই পরীক্ষামূলক সময়কালে ঢাকার সাতটি কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের প্রায় ৪২০০ স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হবে। বিএমআরসি পরিচালক মাহমুদ উজ জাহান বলেন,অংশগ্রহণকারীদের ৫০ শতাংশকে ভ্যাকসিনটি দেওয়া হবে। এই ট্রায়াল সফল হলে বিনামূল্যে কিংবা সস্তায় ভ্যাকসিনটি পাওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের তৈরি হবে বলে জানান তিনি। মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বার্ন ইউনিট-১,কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইউনিট-২ এবং ঢাকা মহানগর হাসপাতাল এই ট্রায়ালে অংশ নেবে।ট্রায়ালটি তদারকি করবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
Link copied!