শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

এবার ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হচ্ছে একুশে পদক

প্রকাশিত: ১১:৫৮ এএম, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩

এবার ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হচ্ছে একুশে পদক

এবার একুশে পদক দেওয়া হতে পারে ১৯ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠানকে। শিগগিরই পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করবে সরকার। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পদকপ্রাপ্তদের হাতে এ পদক তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদকপ্রাপ্ত হিসেবে সম্ভাব্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে ভাষা আন্দোলনে খালেদা মনযূর ই খুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক (মরণোত্তর) ও হাজি মো. মজিবর রহমান। খালেদা মনযূর ই খুদা সম্পর্কে যতটুকু জানা গেছে, তিনি ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভাঙার সময় আহত হয়ে যারা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন তাদের রক্ত দেন। এ ছাড়াও ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের দিনে তিনি প্রথম আজিমপুর স্কুলের ইউনিফর্ম ও নিজের জামা দিয়ে হাতে সেলাই করে আওয়ামী লীগ অফিসে পতাকা উড়িয়েছিলেন। সে সময় আওয়ামী লীগ অফিস ছিল পল্টনে। বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক ৫২’র ভাষা আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জনতার মিছিলে অংশ নেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ৩ ও ১১ নং সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে পাঠানোর দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। শিল্পকলায় একুশে পদক পেতে পারেন ৮ জন। তারা হলেন- অভিনয়ে মাসুদ আলী খান ও শিমুল ইউসুফ। সংগীতে মনোরঞ্জন ঘোষাল, গাজী আবদুল হাকিম ও ফজল-এ-খোদা। আবৃত্তিতে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। শিল্পকলায় নওয়াজিশ আলী খান ও চিত্রকলায় কনকচাপা চাকমা। মাসুদ আলী খান ছাত্রজীবনেই রানা প্রতাপ সিং চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নাট্যজীবন শুরু করেন। দীর্ঘ ৭০ বছর নাট্যাভিনয়ে যুক্ত রয়েছেন। তিনি মহান ভাষা আন্দোলনেরও একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। শিমুল ইফসুফ রজনৈতিক জীবনে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭০ সালে গণ-অভ্যুত্থানের গণসংগীত পরিবেশন করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সংরক্ষণে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন। মনোরঞ্জন ঘোষালকে ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেন্ট গ্রেগরি স্কুল থেকে ধরে নিয়ে যায়। তাকেসহ আরও ৩২ জনকে শাঁখারি বাজারে ব্রাশ ফায়ার করে। পরে তাদের জজকোর্টের সামনে বাগানে গর্ত খুঁড়ে মাটিচাপা দেয়। বৃষ্টি আসার ফলে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। সেখান থেকে ভারতে গিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন। গাজী আবদুল হাকিম দেশের বিশিষ্ট বংশীবাদক। ফজলে-এ-খোদা ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান গান ‘সালাম সালাম হাজার সালাম/সকল শহীদ স্মরণে’র গীতিকার। এ গান একুশের অন্যতম গান হিসেবে এখনও বিবেচিত। জয়ন্ত চটোপাধ্যায়ের হাত ধরে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যাত্রা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ৯ নং সেক্টরে শরণার্থী শিবিরে কর্মরত ছিলেন। চিত্রকলায় কনক চাপা চাকমা প্রত্যন্ত অঞ্চলের আদিবাসীর বর্ণিল সংস্কৃতি, জীবন ও কর্মকে ফুটিয়ে তোলেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক পেতে পারেন মমতাজউদ্দিন (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় পেতে পারেন মো. শাহ আলমগীর (মরণোত্তর)। গবেষণায় পেতে পারেন ড. মো. আবদুল মজিদ। তিনি দেশি প্রজাতির নানা প্রকার বিপন্নপ্রায় মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ প্রযুক্তিসহ ৪০টির মতো উন্নত মৎস্য চাষ ও ব্যবস্থাপনা উদ্ভাবন করেন। তিনিই প্রথম তেলাপিয়া ও রুই মাছের পুষ্টি চাহিদা নিরূপণ করেন। শিক্ষায় একুশে পদক পেতে পারেন প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলাম (মরণোত্তর)। প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ পুরস্কার পেতে পারে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। সমাজসেবায় পেতে পারেন মো. সাইদুল হক। প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ তালিকায় রয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ‘পড়ব, খেলব, শিখব’ স্লোগান নিয়ে পথশিশু, সুবিধাবঞ্চিত ও অসচ্ছল শিশুদের মৌলিক শিক্ষা আহার, চিকিৎসা ও আইনসেবা প্রদান করে থাকে। রাজনীতিতে অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম (মরণোত্তর), আকতারউদ্দিন (মরণোত্তর) একুশে পদক পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভাষা ও সাহিত্যে পদক পেতে পারেন ড. মনিরুজ্জামান। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ভাষাতাত্ত্বিক। ভাষাতত্ত্বের পুনর্গঠনতত্ত্বে তার মৌলিক গবেষণা রয়েছে।
Link copied!