শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

আল্লামা শফী মাটির ঘরে চিরঘুমে

প্রকাশিত: ০৩:৫৫ এএম, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০

আল্লামা শফী মাটির ঘরে চিরঘুমে

মাটির ঘরে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন দেশের শীর্ষ আলেম হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী। শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে মাদরাসা প্রাঙ্গণে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে তাঁর জানাজায় ইমামতি করেন তাঁর বড় ছেলে রাঙ্গুনিয়ার পাখিয়ারটিলা কওমি মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ। জানাজা শেষে মসজিদসংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয় দেশের বর্ষীয়ান এই আলেমকে। আল্লামা শফীর জানাজায় অংশ নিতে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে লাখো মানুষের ঢল নামে। মাদরাসা ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার জায়গাজুড়ে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক, কাচারি সড়ক এবং বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্রসহ যে যেখানে পেরেছেন দাঁড়িয়ে জানাজায় শরিক হয়েছেন। লাখো ভক্ত, অনুসারী, মাদরাসার হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও মুসল্লিরা অশ্রুসিক্ত নয়নে দোয়া, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় শেষবিদায় জানান ‘বড় হুজুর’খ্যাত আল্লামা শফীকে। আল্লামা শফীর মৃত্যু ও জানাজা ঘিরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শুক্রবার রাত থেকেই সতর্ক অবস্থানে ছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় হাটহাজারীসহ পাশের চার উপজেলায় ১০ প্লাটুন বিজিবি ও সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন। এদিকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের চাপে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি মহাসড়কে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জানাজায় অংশ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে হেঁটে ছুটে আসে ছোট, বড়, বয়স্ক লাখো মানুষ। প্রিয় ব্যক্তিকে এক নজর দেখতে লাইনে দাঁড়িয়েও হতাশ হয় অনেকেই। সাধারণ জনতার পাশে দাঁড়িয়ে জানাজায় অংশ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভী, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এদিকে জানাজায় অংশ নিতে গতকাল ভোর থেকেই ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, সাতকানিয়া, পটিয়াসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসতে থাকে তাঁর অনুসারীরা। হৃদরোগ ও বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে ভুগে ১০৪ বছর বয়সী আমির আহমদ শফী গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে মারা যান। ধর্ম সচিবের শোক : ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নুরুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, আল্লামা শফী ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমে-দ্বীন, ইলমে হাদিসের একজন মহান শিক্ষক, বহুসংখ্যক মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ ইসলামের একজন মহান খাদেমকে হারাল। কওমি মাদরাসা সনদের স্বীকৃতিসহ বাংলাদেশে কওমি ধারার শিক্ষাব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে মরহুমের বিশেষ অবদানের কথা তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
Link copied!