মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

আধুনিক পোস্ট সেন্টারের নামে ৫৪১ কোটি টাকা লোপাট

প্রকাশিত: ০৪:০৩ এএম, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০

আধুনিক পোস্ট সেন্টারের নামে ৫৪১ কোটি টাকা লোপাট

ডেইলি খবর ডেস্ক: এক সময় খবরের চিঠিপত্র পৌছানোর মাধ্যম পোষ্ট অফিস এথন নিজেই খবরের শিরোনাম হয়েছে। খবরটির জন্ম দিয়েছেন পোষ্ট অফিসের ডিজি নিজেই। তিনি গ্রামের জনসাধারণকে ডিজিটাল সেবা দেওয়ার কথা বলে শত শত কোটি টাকা লোপাট করেছেন। প্রমানসহ অভিযোগ এসেছে সংশ্লিষ্টস্থানে। অভিযোগে বলা হযেছে ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র এই ন্যক্কারজনক কাজটি করেছেন। তিনি কেনাকাটা থেকে শুরু করে ডিজিটাল পোস্ট সেন্টার স্থাপন করাসহ সব খানেই চরম অনিয়মের স্বাক্ষর রেখে অবসর নিয়েছেন। এখন দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। শুধু তাই নয় বহু ডিজিটাল সেন্টারের অস্থিত্বই নেই,তবুও নাম ভাঙিয়ে তুলে নিয়েছেন ৫৪০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ডাক বিভাগের গঠিত তদন্ত রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। সুত্রগুলো জানায় মহাপরিচালক হওয়ার আগে সুধাংশু শেখর ভদ্র ছিলেন ডাক বিভাগেরই উপ-মহাপরিচালক। তখন তিনিই ছিলেন এই প্রকল্পের পরিচালক। ৫৪০ কোটি ৯৪ লাখ টাকার ই পোস্ট ডাকঘর প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় তার অধীনে। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সরেজমিন প্রতিবেদনে জানা যায়,গাজীপুরের কাপাসিয়ায় পাঁচটি ডাকঘর ঘুরে দেখা গেলো কোথাও কোথাও ডাক চলছে আরেক জনের দোকানে, কোথায়ও আবার পোস্ট অফিসই চলে গেছে পোস্টার মাস্টারের বাড়িতে। স্থানীয়রা জানান,আমাদের পোস্ট অফিস কোথায় আমরা নিজেরাই জানি না। কয়েকজন পোস্ট মাস্টার বলেন,চেয়ার টেবিল দেবে বলেছে কম্পিউটার রাখার জন্য। ব্রাঞ্চ অফিসে এগুলো এখনো দেয় নাই। কবে দেয়া হবে তারও কোন তারিখ নেই। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাস্তবে কাপাসিয়ার চরখামের ডাকঘর একটি কিন্তু নথিতে ব্যবহার করা হয়েছে দুই জায়গায়। এভাবেই এক স্থানের নাম অসংখ্য বার লিখে সাড়ে আট হাজার ডাকঘরের তালিকা পূর্ণ করা হয়েছে। এক পোস্ট মাস্টার বলেন, আমাদের পোস্ট অফিসটা অনেক পুরনো। মেরামত করার জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু ওরা বলছে যে সময় লাগবে। আরেক পোস্ট মাস্টার বলেন,কাজ করতে পারতেছি না। কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেছে। স্ক্যানার মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। ডাক বিভাগের ২০১৫-১৬ সালে একটি নথিতে দেখা যায় কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে দেখানো হলেও খাতায় উল্লেখ নেই কি কেনা হয়েছে? এসব যন্ত্রপাতি গ্রহণ কমিটির কাছেও সুধাংশু ভদ্র ছিলেন এক অতি পরিচিত নাম। ডাক অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আনজির আহমেদ একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে বলেন,ফাইলপত্র আমাদের কাছে কখনো দেয়নি। আমাদের কোন গ্রহণ কমিটিতেও রাখেনি। খোদ মন্ত্রণালয়ের গঠিত ২টি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট বলছে প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে সবখানে। এই বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার গণমাধ্যমকে বলেন,অনিয়ম প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন,এই তদন্তের ফলাফল চূড়ান্তভাবে আসবে আমার কাছে। তার প্রেক্ষিতে অবশ্যই আমি ব্যবস্থা নিবো। এদিকে, ২০১২ সালে শুরু হয়ে ২০১৭ সালে শেষ হওয়া প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে এরই মধ্যে ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক।
Link copied!