দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার কারণে আগেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরের মধ্যে হলে অবস্থানকারী সকল শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।
এবার কোমলমতি শিশুদের নিরাপত্তা বিবেচনায় দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ৮ টি বিভাগীয় শহরের সিটি করপোরেশনের এলাকাভূক্ত সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো পরিচালিত লার্নিং সেন্টারসমূহের শ্রেণিকার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে প্রথামিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন বিজ্ঞপ্তিতে সই করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা দুই সপ্তাহ ধরে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর মঙ্গলবার তা সহিংসত রূপ পায়।
আগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে দেখা গেলেও সোমবার থেকে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে যোগ দেয়। মঙ্গলবার তাদের সঙ্গে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদেরও দেখা যায়। ১৬ জুলাইমঙ্গলবার সকাল থেকে তারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের অবরোধের কারণে রাজধানী একপ্রকার অচল হয়ে পড়ে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশাপাশি দেশের এ দুই বড় শহরে রেলপথও অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। সব মিলিয়ে নিদারুণ ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
এই বিক্ষোভ-অবরোধের মধ্যে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারসমর্থক সংগঠনের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে শিক্ষার্থী, পথচারীসহ ছয়জন নিহত হন, আহত হন কয়েকশ মানুষ। এর মধ্যে চট্টগ্রামে তিনজন এবং ঢাকায় দুইজন এবং রংপুরে একজন করে মারা গেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুর, গাজীপুর, রাজশাহী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিজিবি নামানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :