শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১

সেই ৪০০ কোটির পিয়নের অবৈধ সম্পদের খোঁজে সিআইডি

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৪, ০৭:৪৮ পিএম

সেই ৪০০ কোটির পিয়নের অবৈধ সম্পদের খোঁজে সিআইডি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনের ব্যক্তিগত স্টাফ ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তাঁর কাজ ছিল সুধা সদনে খাওয়ার পানি সরবরাহ করা। এ কারণে তাঁর নাম হয় ‘পানি জাহাঙ্গীর’। পরে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী বলে পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। এই পরিচয় ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পদ, বিভিন্ন চাকরিতে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেন জাহাঙ্গীর। এক পর্যায়ে হেলিকপ্টাওে চলাচল শুরু করেন।
প্রভাব খাটিয়ে তদবির বাণিজ্যের মাধ্যমে গড়েছেন কোটি টকার সম্পদ। বাগিয়েছেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদ। প্রধানমন্ত্রীর বলয়ে েেথকে নানারকম ফন্দিফিকিরের মাধ্যমে তিনি ৪০০ কোটি টাকার সম্পদসহ গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সন্মেলনে তা প্রকাশ করেছিলেন। গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী–-১ আসন (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চেয়েছিলেন।
গত ১৪ জুলাই গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার বাসার কাজ করে গেছে পিয়ন, সে এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। এটা বাস্তব কথা। কী করে বানাল এই টাকা। যখন আমি জেনেছি, তাকে বাদ দিয়ে কার্ড সিজ করে আমি ব্যবস্থা নিয়েছি।’
১ অক্টোবর মঙ্গলবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায়, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে রয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ। যার মধ্যে ধানমন্ডিতে ২ হাজার ৩৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, ১টি গাড়ি, বিভিন্ন ব্যবসায় মূলধন ৭৩ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া যায়।
এ ছাড়া জাহাঙ্গীরের নামে নিজ এলাকায় ৪ কোটি টাকার কৃষি ও অকৃষি জমি, মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে দুটি দোকান, মিরপুরে ৭ তলা ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট,গ্রামের বাড়িতে একতলা ভবন এবং চাটখিলে পৈতৃক ভিটায় চারতলা বাড়ি রয়েছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি তাঁর পরিবারের একটি আটতলা বাড়ি রয়েছে নোয়াখালী শহর মাইজদীর হরিনারায়ণপুর এলাকায়। এর ১৯টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮টি ভাড়া দেওয়া আছে।
অস্থাবর সম্পদ হিসাবে জাহাঙ্গীরের নগদ ও ব্যাংকের গচ্ছিত মিলিয়ে ২ কোটি ৫২ লাখ ২ হাজার ৪৩০ টাকা, ডিপিএস ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, এফডিআর ১ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬৮ টাকা এবং তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবের স্থিতি ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৫ টাকা, ডিপিএস ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং অংশীদারি ফার্মে মূলধন ৬ কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার তথ্য পাওয়া যায়।
জাহাঙ্গীর আলম এ কে রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক ও হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন বলেও জানতে পেরেছে সিআইডি। এদিকে অপর একটি সুত্র জানায় রাজধানীর ধানমন্ডির ঢাকা আহছানিয়া মিশনের ধানমন্ডির একটি ভবনে জাহাঙ্গীরের একটি আলিশান অফিস রয়েছে। এখানে বসে নানারকম তদবীর-ঠিকাদারী বদলী পোষ্টিংসহ নানারকম অবৈধ আযের কার্যক্রম চালিয়েছেন।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!