রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

সৌন্দর্য ধরে রাখতে প্রতিদিন যেসব খাবার খেতে বলছেন চিকিৎসকরা

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ০৯:১০ এএম

সৌন্দর্য ধরে রাখতে প্রতিদিন যেসব খাবার খেতে বলছেন চিকিৎসকরা

কিছু খাবার আছে, যা নিয়মিত খেলে বয়সজনিত প্রভাব অনেকটাই কমানো সম্ভব। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের নানা পরিবর্তন ঘটে। চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে,ত্বক হয়ে পড়ে রুক্ষ ও নিস্তেজ। তবে কিছু খাবার আছে, যা নিয়মিত খেলে বয়সজনিত প্রভাব অনেকটাই কমানো সম্ভব। যদিও শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট খাবার খেয়ে বয়স থামিয়ে রাখা যায় না, তবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বয়সের প্রভাব ধীরে আনতে সহায়ক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বয়স ধরে রাখতে হলে চাই উচ্চ প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার। নিচে এমন ১০টি পুষ্টিকর খাবারের তালিকা দেওয়া হলো, যা আপনার বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল-অলিভ অয়েলকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর তেল। এতে রয়েছে ৭৩% মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা প্রদাহ কমিয়ে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করে। এছাড়াও এতে রয়েছে টোকোফেরল,বিটা ক্যারোটিন ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। সালাদে মিশিয়ে বা ডিপ হিসেবে খেতে পারেন।
গ্রিন টি
গ্রিন টিতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,বিশেষ করে পলিফেনল। এটা ত্বকের কোষকে সান ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে, ফ্রি র‌্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করে। দিনে ১২ কাপ গ্রিন টি পান করতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।  
নাকি ক্ষতিকর 
চর্বিযুক্ত মাছফ্যাটি ফিশ বা চর্বিযুক্ত মাছের তালিকায় আছে সার্ডিন , হেরিং এবং অ্যাঙ্কোভিস এবং অন্যান্য বড় পেলাজিক মাছ যেমন সেলমন, ট্রাউট, টুনা,সোর্ডফিশ এবং ম্যাকেরেল । এই মাসগুলোতে রয়েছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা প্রদাহ কমিয়ে হৃদরোগ রোধ করে। পাশাপাশি এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যাসটাক্স্যানথিন ত্বকের ইলাস্টিসিটি ও আর্দ্রতা বাড়ায়। সপ্তাহে অন্তত ২ দিন ফ্যাটি ফিশ খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।
ডার্ক চকলেট
ডার্ক চকলেটে রয়েছে ফ্ল্যাভানল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে এবং সূর্যরশ্মির ক্ষতি প্রতিরোধ করে। চিকিৎসকরা৭০ শতাংশ বা তার বেশি কোকো যুক্ত চকলেট খেতে বলেন কারণ এতে চিনি প্রায় থাকেই না বলা যায়।
সবজি
গাজর, মিষ্টি কুমড়া,পালং শাক, ব্রোকলি, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি সবজি বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি-তে ভরপুর। বিটা ক্যারোটিন ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি বা আলট্রা ভায়োলেট রে থেকে রক্ষা করে, আর ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত ৫ ধরনের রঙিন সবজি খাদ্যতালিকায় রাখুন।
ফ্ল্যাক্সসিড 
এতে রয়েছে লিগন্যান নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এক ধরনের ওমেগা-থ্রি। এগুলো ত্বকের আর্দ্রতা বাড়িয়ে বলিরেখা হ্রাস করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। সকালে দই বা ওটমিলের সঙ্গে ফ্ল্যাক্সসিড গুঁড়া করে মিশিয়ে খেতে পারেন।
ডালিম
ডালিমে আছে ফ্ল্যাভোনল,ট্যানিন এবং ভিটামিন কে। এটি কোলাজেন ধ্বংস রোধ করে এবং নতুন কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে, ফলে ত্বক দীর্ঘসময় টানটান ও উজ্জ্বল থাকে। সকালে বা বিকেলের স্ন্যাক্স হিসেবে ডালিম খাওয়া উপকারী বলছেন পুষ্টিবিদরা।
অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি ত্বককে ফ্রি র‌্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। সালাদে কুচি করে মেশাতে পারেন অথবা ব্রেডে স্প্রেড হিসেবে ব্যবহার করুন।
টমেটো
টমেটোতে রয়েছে লাইকোপিন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। লাইকোপিন ত্বককে উজ্জ্বল রাখে এবং বলিরেখা প্রতিরোধে সহায়ক। রান্না করা টমেটো বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে খেলে লাইকোপিন শোষণ ভালো হয় বলছেন চিকিৎসকরা।
কোলাজেন পেপটাইড
কোলাজেন শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন, যা বয়স বাড়ার সঙ্গে কমে যায়। হাইড্রোলাইজড কোলাজেন পেপটাইড সহজে শোষিত হয় এবং ত্বকের ইলাস্টিসিটি ও আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এটি সাপ্লিমেন্ট আকারে গ্রহণ করতে পারেন অথবা প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার (যেমন মাছ, ডিম, চিকেন) খেলে শরীর নিজেই কোলাজেন তৈরি করে।
বয়স ধরে রাখার কোনো ম্যাজিক নেই, তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস আপনার শরীর ও ত্বকের বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে অনেকটাই ধীর করতে পারে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এসব খাবার অন্তর্ভুক্ত করলে শরীর ভেতর থেকে সতেজ থাকবে এবং বাইরের সৌন্দর্যও থাকবে অটুট। চেহারার জেল্লা বাড়াতে ওষুধ নয় বরং স্বাস্থ্যকর খাবার দরকার। তাই বয়সের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুস্থ ও সুন্দর থাকতে এখনই নজর দিন খাদ্যাভ্যাসে।সূত্র: হেলথলাইন

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!