মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

আওয়ামী প্রেতাত্মা ওয়ারেছআলী-হোসনে আরা দম্পতির নীল নকশা বাস্তবায়নের অপপ্রয়াস

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২৫, ০৪:৪৫ পিএম

আওয়ামী প্রেতাত্মা ওয়ারেছআলী-হোসনে আরা দম্পতির নীল নকশা বাস্তবায়নের অপপ্রয়াস

৫ ডিসেম্বর পে-স্কেল আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকারের বিরুদ্ধে গভীর নীলনকশা বাস্তবায়নের অপপ্রয়াস 
মনজুর এলাহী শাহীন: দেশের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পে-স্কেল বাস্তবায়নের আন্দোলনকে ঘিরে হঠাৎ করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা এক রহস্যজনক চক্রের অপতৎপরতা রীতিমতো প্রশাসনিক মহলে তীব্র উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। পে-স্কেল ও নিয়োগবিধি নিয়ে ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর আগেই কর্মচারীদের মধ্যে  বিভ্রান্তি ছড়ানো, সরকারের বিরুদ্ধে জনমনে ভুল বার্তা ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরির উদ্দেশ্যে একটি মহল আন্দোলনকারীদের সাথে মিশে সুপরিকল্পিতভাবে নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে বলে ইতিমধ্যে গুঞ্জন উঠেছে।এই চক্রান্তের নেপথ্যে রয়েছেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ওয়ারেছ আলী এবং তার স্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত এফডবিøউভি হোসনে আরা খাতুন, যাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কিত আওয়ামী লীগের  রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে।
বহিরাগত ও অবসরপ্রাপ্ত এই দম্পতির নেতৃত্বে ৫ই ডিসেম্বর দাবি আদায়ের আন্দোলন কে কেন্দ্র করে গভীর ষড়যন্ত্রেও অভিযোগ উঠেছে এই স্বামী-স্ত্রী জুটি  বিভ্রান্তিকর পোস্ট ও উসকানিমূলক বক্তব্য তাদের নিজস্ব ফেসবুক পেইজ এবং বিভিন্ন গ্রæপে ছড়িয়ে কর্মচারীদের অস্থির করার চেষ্টা করছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বিভ্রান্ত করে মিথ্যা আন্দোলনের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ ও উঠেছে এই দম্পতির বিরুদ্ধে।একই সাথে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের স্থিতিশীলতা ধ্বংস করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে 
বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে আওয়ামী  রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার চেষ্টায়ও লিপ্ত এই দম্পতি বলে সূত্রমতে জানা যায়। ওয়ারেছ আলী পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নন। তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা চলমান, এমনকি অতীতে কারাবরণ করেছেন বলেও জানা যায়।
হোসনে আরা খাতুন দুই বছর আগে অবসর গ্রহণ করে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ত্যাগ করেছেন। তাদের কারও অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা নিয়ে কোনো দাবি তোলার
নৈতিক প্রশাসনিক এবং আইনি আধিকার নেই বলে সূত্রমতে জানা যায়। তবুও আওয়ামী লীগের অতীত রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার স্মৃতি ব্যবহার করে তারা আবারও সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার চেষ্টা করছে যা প্রশাসনকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
প্রশ্ন উঠেছে একজন বহিরাগত কর্মচারী হোসনে আরা অন্য একজন  বহিরাগত  কর্মকর্তা ওয়ারেছ আলী কীভাবে ঋডঠ কর্মচারীদের নিয়োগবিধি দাবি নিয়ে নেতৃত্ব দেন?
অভিজ্ঞদের মতে-এই দম্পতি অতীতে আওয়ামী প্রেতাত্মা হিসেবে পরিচিত ছিল রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে দুর্নীতি, নিয়োগবাণিজ্য ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা তৈরি তাদের স্বভাবসিদ্ধ আচরণ ছিল। এখন তারা খোলস পাল্টে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রশাসনের কঠোর সতর্কবার্তা,অধিদপ্তর স্পষ্টভাবে জানিয়েছে  বহিরাগত ব্যক্তিদের তৈরি কোনো ভিডিও বা পোস্ট শেয়ার করলে তা শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসেবে গণ্য হবে। 
কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি এ অপচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এফডবিøভি কর্মীদের নিয়োগবিধি এর ন্যায্য দাবি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে অধিদপ্তর ও  সরকারি প্রটোকল এবং সরকারি  বিধি-বধান অনুযায়ী।
সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে কর্মকর্তারা বলেন,“পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর বহু বছরের ত্যাগ, সততা,নীতি ও দেশের জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কোনো বহিরাগত বা অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি যেন ব্যক্তিগত স্বার্থে এই প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে না পারে এ ব্যাপারে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের  সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
অভিযোগ রয়েছে-আওয়ামী লীগের সময় এ দম্পতি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে যুক্ত ছিল। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে নিয়োগবাণিজ্য পরিচালনা করতো প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিগত সুবিধা নিতো।সমাজ সেবা অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় দুদকের মামলার মূল আসামি হিসেবে ওয়ারেছ আলী এর আগেও জেলে যায় এবং বর্তমানেও সেই দুদকের মামলা চলমান রয়েছে। এখন পে-স্কেল ও নিয়োগবিধিকে পুঁজি করে তারা আবারো সেই পুরনো নেটওয়ার্ক পুনর্গঠন করার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে ওয়ারেছ আলী ও হোসনে আরা দম্পতির মন্তব্য জানতে চাইলে তারা উভয়ই স্বৈরাচার সরকারের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেন।ওয়ারেছ আলী বলেন ফেডারেশনের সভাপতি হওয়ার কারণে বিভিন্ন মন্ত্রীদের সাথে তার শুভেচ্ছা বিনিময় করতে হয়েছে। তাছাড়া প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে সরকারের সাথে সুসম্পর্ক রাখা তার  স্বাভাবিক কর্মকান্ডের অংশ।কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকান্ডের বাইরে  বিভিন্ন ক্ষেত্রে মন্ত্রীদের বাসায় যেয়ে কতিপয় ব্যক্তিদের সাথে মিশে মন্ত্রীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করার কারণ কি? এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ওয়ারেছ আলী। হোসনে আরা মহিলা লীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন কিনা এ প্রশ্নের উত্তর সুকৌশলে এড়িয়ে যান হোসনে আরা। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সুনাম ও রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সতর্কতা জরুরি:
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর দেশের জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে অগ্রগণ্য, অত্যন্ত সংবেদনশীল ও নীতিনিষ্ঠ ভূমিকা পালনকারী একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে বহিরাগত কোনো ব্যক্তির প্রভাব,অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তির উসকানি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর অপপ্রচার,রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
বিশেষত বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমল থেকে উঠে আসা আওয়ামী প্রেতাত্মা ওয়ারেছ আলী–হোসনে আরা দম্পতির নতুন রাজনৈতিক মুখোশ পরে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অপচেষ্টা রাষ্ট্র ও প্রশাসনের জন্য গুরুতর হুমকি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।

 

 

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!