৭১ টিভির শাকিলের মধ্যস্থতায় হাজার কোটি টাকার ব্যবসা
প্রকাশিত: ০৫:২৮ এএম, জানুয়ারি ৪, ২০২১
ওয়াশিংটনস্হ বিডি দূতাবাস থেকে চরম জালিয়াতির মাধ্যমে এ বি হাইটেক কনসোর্টিয়াম লিমিটেড টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স পেয়ে আওয়ামী বিরোধী সিন্ডিকেটের হাজার হাজার কোটি টাকার ভাগবাটোয়ারায় মধ্যস্থা করেছেন বাংলাদেশের ৭১ টিভির শাকিল আহমেদ। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। সমালোচনার সুত্রপাত ধরে জানা গেছে, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল লিমিটেডের সাবেক এম ডি মনোয়ার হোসেনকে অন্তর্ভুক্তি রেখে এবং তার মাধ্যমে লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য দাখিলকৃত দরখাস্তের সঙ্গে অর্থ সংযুক্তি, (১কোটি ৬ লাখ) ব্যবস্থা করা। মূল দরখাস্তে মার্কিং(৮২)করে সিনিয়র আইসিটি উপদেষ্টা লাইসেন্স প্রদান করেছিলেন। চক্রটি জালিয়াতির মাধ্যমে তা পরিবর্তন করে। জালিয়াতির মাধ্যমে চক্রটি মুল ইনভেস্টর ইবিএল ব্যাংকের চেয়ারম্যান শওকত আলী চৌধুরীকে বাদ দিয়ে কয়েকজন হাইব্রিড ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগকে অর্থের বিনিময়ে সংযুক্তি করে পরবর্তীতে তাদেরকে বিপুল অর্থ দিয়ে শেয়ার হস্তগত করে এবং তথাকথিত চেয়ারম্যান খালিদ হাসান এবং এম এ সিদ্দিকীর অধিকাংশ শেয়ার হস্তান্তর করে, সেই সঙ্গে কনসোর্টিয়ামের কোম্পানীগুলোকে অন্যায় ভাবে বাদ দিয়ে দেয় হাইব্রিড চক্রটি।
সূত্রগুলো জানায়, সর্বশেষ নতুন ইনভেস্টরদের কাছে ন্যাক্কারজনক ভাবে এবি হাইটেক ইন্টারন্যাশনাল ডিরেক্টরদের শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয় চক্রটি।
এরআগে গত ২০১৮ সালের প্রথম দিকে বিটিআরসি টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স প্রদানের ঘোষণা দেয়। তখন চেয়ারম্যান ছিলেন আমেরিকা প্রবাসী ড. শাহজাহান মাহমুদ। ঘোষণার পরপরই হাইব্রিড খালিদ হাসান, সাদিক খান,হারুনুর রশীদের নেতৃত্ব গড়ে উঠা একটি কোম্পানী। যা পরবর্তীতে এবি হাইটেক লাইসেন্স নাম দিয়ে এই লাইসেন্স পেতে ওই সিন্ডিকেট তৎপর হয়ে উঠে। সাদিক খান, হারুনুর রশীদ দু জনে মিলে (দিলু নামে একজনের পরিচিত),এই দিলুকে পরবর্তীতে এবি হাইটেক ইন্টারন্যাশনালে ৫হাজার শেয়ার দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়) ঢাকা ক্লাবের সভাপতি খাইরুল মজিদকে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে (যে টাকা প্রোফাইল তৈরীতে ব্যবহার করা হয়েছিল) ৫০% শেয়ার দিয়ে দেওয়া হয়। খাইরুল মজিদকে কেন ৫০% শেয়ার দেওয়া হলো এর উত্তরে সাদিক খান বলেছিলেন খাইরুল মজিদ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ১৫০০ কোটি টাকা লাইসেন্সের পেছনে ব্যয় করবে। যদিও পরবর্তীতে সে কোন অর্থই লগ্নি করেননি। পরবর্তীতে খাইরুল মজিদ তার ৫০% শেয়ার থেকে হারুনুর রশীদকে ৫% নিতা ফারহানাকে ৫% আলমগীর হোসেন সোহেলকে ৫% দিলুকে ৫% সলিডকে ৫% দেয় আর ওদিকে খালিদ হাসান এবং সাদিক খান মিলে ফজলুর রহমানকে ৫% এম এ সিদ্দিকীকে ৫% এইচ কে বাপ্পাকে ৫% রফিক পারভেজকে ৫% আইয়ূব খানকে ৫% আলতাফ হোসেনকে (শাওন প্রজা) ৫% প্রদান করে।
এদিকে খাইরুল মজিদকে ইনভেস্ট ব্যতিরেকে এবি হাইটেকে তার সংযুক্তির ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন এবং সেখানে দুজনের মধ্যে প্রচন্ড বাকবিতন্ডা হয়। মিটিংয়ে ইনভেস্টরদের দেওয়া ১১% নিয়ে কথা হয় এবং খালিদ হাসান গ্রুপকে ৬% সিনার্জি লজিস্টিক ২.৮৩% ওরেন্জ ২.১৪% ( ইনভেস্টর হিসেবে হারুন কর্তৃক আনীত ) হিসেবে ভাগ করা হয়। খালিদ হাসান, রফিক পারভেজ, খাইরুল মজিদ সহ উপস্থিত সকলে সজ্ঞানে, স্বইচ্ছায় এটা মেনে নেয়।
জানা গেছে, বিটিআরসি লাইসেন্সের জন্য দরপত্র দাখিলের সময় দিয়েছিল ২০১৮ সালের এপ্রিল ১২তারিখে। পরবর্তীতে এক মাস বাড়িয়ে করে মে মাসের ১২ তারিখ করা হয়। লাইসেন্সের সঙ্গে পরিপূর্ণ প্রোফাইল এবং দরখাস্ত ফি ১কোটি ৬ লাখ টাকা দিতে হবে। কিন্তু খালিদ হাসান কিংবা খাইরুল মজিদ গ্রুপ কেহই সেই অর্থ যোগাড় করতে সমর্থ না হওয়ায় সকলেই রনেভঙ্গ দেয়। তখন মনোয়ার, কবির, হারুনুর রশীদ দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে প্রোফাইল রেডি করে এডিএন এবং ইবিএল দু'ইনভেস্টরের কাছে থেকে ১ কোটি ৬ লাখ টাকার চেক নিয়ে লাইসেন্সের জন্য দরখাস্ত জমা করে। তখন ফজলু, সাদিক, খালিদ হাসান, বাপ্পা , খাইরুল মজিদ এদেও উপস্থিতি ছিল না। রফিক পারভেজ ছিলেন কিন্ত তার কোন ভূমিকাই ছিল না। তবে সোহেল এবং হারুনুর রশীদ প্রোফাইল রেডি করার নামে আলতাফ হোসেনের কাছে থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়ে নিলেও তা ব্যয় হয়নি। এদিকে ২০১৮ সালের ১২ই মে লাইসেন্সের জন্য এবি হাইটেক কনসোর্টিয়ামের নামে আবেদন জমা করা হলো। এতে মোট ৮টি াাবেদন জমা পরে। কিছু দিন পরই খালিদ হাসান, এম এ সিদ্দিকী,ফজলুর রহমান এবং সাদিক খান জালিয়াতি করে যে আবেদনের উপর মার্কিং করে ৯৫% এবি হাইটেক ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে নিয়ে নেয় এবং কনসোর্টিয়ামের সাতটি কোম্পানীর জন্য রাখে মাত্র ৫%। এই জালিয়াতির কারণে আসল বা প্রধান ইনভেস্টর শওকত আলী চৌধুরী সংশ্লিষ্ট এনআরবি সকলকে প্রচন্ড ধিক্কার দিয়ে প্রস্থান করেন।এই প্রহসনের মধ্যে দিয়েই শুরু হয় এবি হাইটেক কনসোর্টিয়ামের কপালে চরম দুর্ভোগ। ইতিমধ্যেই খালিদ হাসান, এম এ সিদ্দিকী অনেক নানা কুটকৌশলে ৭১ টিভির বিএনপি ঘরোনার শাকিল আহমেদ ও ঢাকার একজন এমপির মাধ্যমে লাইসেন্স ফি,ভ্যাট বাবদ ২৮ কোটি টাকা বিটিআরসিতে প্রদান করে। এমপি শুরু থেকেই বলেছেন উনি ব্যবসা করবেন না উনার টাকা উনাকে দিয়ে দিতে হবে কিন্ত নতুন কোন ইনভেস্টর জোগাড় না হওয়ায় গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
এরমধ্যে খালিদ হাসান, এম এ সিদ্দিকী গত আগস্ট মাসে ওয়াশিংটনস্হ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জাল পেপারস কোন ধরনের বোর্ড মিটিং ছাড়াই দূতাবাস কর্মকর্তার অ্যাটাস্টেশন নিয়ে সরাসরি (ঢাকায় পররাস্ট্র মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন ছাড়াই)স্টক এক্সচেন্জে পাঠিয়ে দিয়ে কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে অধিকাংশ শেয়ার হাতিয়ে নেয়, নতুন কিছু কোম্পানীকেউ ইচ্ছেমতো শেয়ার বিলিয়ে দেয়। এবং সিনার্জিকে ফরফিটেড দেখায় এবং ৭১ টিভির সাকিলের মধ্যস্থতায় নতুন ইনভেস্টর ম্যানেজ করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করতে থাকে। পরবর্তীতে এবি হাইটেক খালিদ হাসান গ্রুপ এবং ফজলুর রহমান গ্রুপে রুপ নেয়। দু গ্রুপই অর্থের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে এমতাবস্থায় নতুন ইনভেস্টররা সংশ্লিষ্ট এনআরবিদের অর্থ দিতে রাজী হয় এবং সেই টাকা নিম্নের ব্যক্তিবর্গের মাঝে বন্টন করা হয় : খালিদ হাসান-২.৭০ কোটি, এম এ সিদ্দিকী, ২.৭০ কোটি, ফজলুর রহমান -২.৭০ কোটি, রফিক পারভেজ-২.৭০ কোটি, সাদিক মোহান্মদ খান-২.৭০ কোটি,এইচ কে বাপ্পা-২.৭০ কোটি,আইয়ূব খান- ২.০৫ কোটি, আলতাফ হোসেন-২.০৫ কোটি, খাইরুল মজিদ গ্রæপ ১০.৫০ কোটি টাকা। গ্রুপে ছিলেন-১) হারুনুর রশীদ হাইব্রিডরা। (সাদিক খান কর্তৃক রিক্রুট) নিতা ফারহানা (চাইনিজ কোম্পানী আনতে সহযোগিতা করেছিল যদিও পরে জালিয়াতি করে ফরফিটেড করা হয়েছে। দিলু (হাইব্রিড খাইরুল মজিদ কর্তৃক রিক্রুট), সলিড(এক জনের ভাগ্নে)
উল্লেখ্য, খাইরুল মজিদ উপরোক্ত চারজনকে কত করে দিয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি।তবে জেড এন এন্টারপ্রাইজ পেয়েছে-৭৫ লক্ষ, সিনার্জি লজিস্টিক লিমিটেড : ৫৫ লক্ষ টাকা। এদিকে মৃত আলমগীর হোসেন সোহেলের পরিবারকে কত দেওয়া হয়েছে কিংবা আদৌ দেয়া হয়েছে তা জানা যায়নি। হাইব্রিডদের ভাগাভাগি নিয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য আসছে।
(মাহমুদনবী বাকির ফেসবুক থেকে)