নিজেকে তিনি কখনো নবাব সলিমুল্লাহর পরিবারের সদস্য, আবার কখনো নবাবের ‘নাতি’ বলে পরিচয় দিতেন। এভাবে প্রতারণার জাল বিছিয়ে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। আর হাতিয়ে নিয়েছিলেন সাধারণ মানুষের প্রায় ১০ কোটি টাকা। অবশেষে গত ২৮ অক্টোবর তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি)। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আরো পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নবাবের ‘নাতি’ পরিচয় দেওয়া প্রতারকের নাম আলী হাসান আসকারী (৪৮)। গ্রেপ্তারকৃতদের তিনজনই আসকারীর ভাই। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন রাশেদ ওরফে রহমত আলী ওরফে রাজা (৩৪), মীর রাকিব আফসার (২০), সজীব ওরফে মীর রুবেল (৩৩), আহম্মদ আলী (৩৮) ও বরকত আলী ওরফে রানা (৩২)। গত কয়েক দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন সিটিটিসির অতিরিক্ত উপকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম।
তৌহিদুল ইসলাম জানান, আসকারীর প্রকৃত পরিচয় খুঁজতে গিয়ে কামরাঙ্গীর চর থেকে তাঁর বাবা আব্দুস সালামকে এনে মুখোমুখি করার পরই জানা যায় আসল পরিচয়। তিনি নিজের ও বাবার নাম পরিবর্তন করে হয়েছিলেন নবাব সলিমুল্লাহর নাতি। বিশেষ করে ১৯৪৭ সালে আসকারী বা কামরুলের দাদা লোকমান হোসেন পুরান ঢাকায় এসে বসবাস শুরু করেন। বর্তমানে তাঁর বাবা সালাম দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে থাকেন কামরাঙ্গীর চরে। সেখানে তাঁর ছোট ছেলে আমিনুল ইসলামও থাকেন।
কামরুল শুধু নিজের নামই নয়, স্ত্রীর নামও পরিবর্তন করেছেন, যা পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে জানিয়ে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, আসকারীর চালচলন দেখে পুরান ঢাকার অনেকে তাঁকে নবাবের নাতিই মনে করতেন। বিভিন্ন ধরনের তদবির থেকে শুরু করে বিদেশে লোক পাঠানোসহ নানাভাবে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন আসকারী। দুই দফা পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তারকৃতরা এখন কারাগারে রয়েছেন বলে জানা গেছে।