গ্রীন ডেল্টাসহ ৪৬ বীমা কোম্পানির তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
প্রকাশিত: ০৫:৫৩ এএম, জানুয়ারি ৬, ২০২১
ডেইলি খবর ডেস্ক: বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলোতে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য চাওয়া হয়। বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ তথ্য জানাতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বীমা কোম্পানিগুলোর সব ব্যাংক হিসাবের তথ্য ৭ জানুয়ারির মধ্যে পাঠাতে হবে। সুনির্দিষ্টভাবে যেসব তথ্য পাঠাতে হবে এরমধ্যে রয়েছে-ব্যাংক হিসাবের ধরণ, হিসাবের নম্বর, মোট হিসাবের সংখ্যা এবং হিসাব সংরক্ষণকারী শাখার নাম।
যে সব কোম্পানির তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলো হল-অগ্রনী ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স,এশিয়া প্যাসেফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স. বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি (বিজিআইসি),বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স,কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স,দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স,ঢাকা ইন্স্যুরেন্স,ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স,ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, গেøাবাল ইন্স্যুরেন্স, গ্রীন ডেল্টা, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স,জনতা ইন্স্যুরেন্স, কর্নফুলি, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল, নিটল ইন্স্যুরেন্স, নর্দান ইন্স্যুরেন্স,প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স,পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স,প্রাইম ইন্স্যুরেন্স,প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স,পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স,রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, সাধারণ বীমা কর্পোরেশন, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, সিকদার ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স এবং ইউনাইটেড জেনারেল ইন্স্যুরেন্স। জানা গেছে, চরম বিশৃংখল দেশের বীমাখাত। কোনো এখানে শৃঙ্খলা ফেরানো যাচ্ছে না। বছরের পর বছর অপেক্ষার পরও গ্রাহকের দাবি পূরণ করছে না বেশ কিছু কোম্পানি। নিয়ন্ত্রকসংস্থার চোখ ফাঁকি দিতে একাধিক ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছে কোম্পানিগুলো। এরমধ্যে অধিকাংশ বীমা কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত। ফলে এক্ষেত্রে বাজারে কারসাজির জন্য বিভিন্ন প্রান্তিকে তাদের আয় বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেখা হচ্ছে। এরফলে কোম্পানিরগুলোর শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করছে। এদিকে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সাল শেষে বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম আয় ছিল ৯ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ৮ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে সাধারণ বীমার প্রিমিয়াম আয় ছিল ৩ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। আগের বছরে যা এবং ৩ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা।
এদিকে গ্রীন ডেল্টা ইনসুরেন্স থেকে ২শ কোটি টাকা লুপাটের অভিযোগ উঠেছে। ফলস বা ভুয়া ক্লেইম দেখিয়েও ২০১৪ সাল থেকে গত সাত বছরে কম করে হলেও ২’শ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন,সাধারণ বীমা করপোরেশনের উচ্চ পদে কর্মরত ও সাবেক গ্রীন ডেল্টা ইনসুরেন্স কোম্পানীর এক পরিচালক। হাতে আসা কোম্পানীর কাগজপত্র পর্যারোচনা করে ঘটনার বিবরনে জানা গেছে
নানা অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে গত ২০১৪ সাল থেকে শত কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে গ্রীন ডেল্টা ইনসুরেন্স কোম্পানীতে। দুর্নীতির ঘটনা ফাসের অভিযোগ তুলে অন্যয় ভাবে বিদায় দেয়া হয়েছে বেশ কয়েক জন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ পরিচালক ও কর্মকর্তাদের। আর এসব অনিয়ম দুর্নীতি চাপা দিতে কোম্পানীর শীর্ষ কয়েকটি পদে বসানো হয়েছে ইনসুরেন্স অভিজ্ঞতাহীন কয়েকজনকে। যাদের বিরুদ্ধ নানা সময়ে আর্থীক অনিয়ম,নারী কেলেঙ্কারীর মতো অভিযোগও আছে। কাগজ ঘেটে দেখা গেছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা চৌধুরী এসব করয়েছেন,করাচ্ছেন। এমন বহু অভিযোগের দালিলিক প্রমানপত্র ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর ডট কমের হাতে পৌঁছেছে। কাগজপত্র ঘেটে দেখা গেছে ২০১৯ সালের ব্যলেন্স সিটের ৯ নম্বর নোটে গ্রীন ডেল্টা ইনসুরেন্স কোম্পানীকে ৯৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা দেনা দেখানো হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে কোম্পানী আরো বেশি দেনা আছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রীন ডেল্টা ইনসুরেন্স কোম্পানীর অর্থ বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, কোম্পানীর ব্যলেন্স সিটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা দেখানো হয়েছে ৩১৯ কোটি টাকা। কৃত্রিম ভাবে ব্যলেন্স সিটকে শক্তিশালী দেখানোর জন্য প্রকৃত পাওনা থেকে অনেক বেশি পাওনা দেখানো হয়েছে। আর দেনা দেখানো হয়েছে প্রকৃত দেনার থেকে অনেক কম বলেও ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।