বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়েছে। বার্তা সংস্থা সংস্থা রয়টার্সের হিসাবে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এমন এক সময় এই মৃত্যুর খবর এলো, যখন করোনার বিভিন্ন টিকার আবিষ্কারের সফলতার খবর আসছে। দেশগুলোর ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে আর ভাইরাসটির নতুন নতুন ধরনেরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে।
রয়টার্স বলছে, মৃত্যুর সংখ্যার প্রথম ১০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে ৯ মাস সময় লেগেছে। কিন্তু মাত্র তিন মাসের মাথায় সেই সংখ্যা দ্বিগুণ অর্থাৎ ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেল।
এ যাবত ২০২১ সাল পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন ১১ হাজার ৯০০ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। প্রতি আট সেকেন্ডে একটি মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে অতিসংক্রামক এই ব্যাধি।
এক ভিডিও বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন, আমাদের বিশ্ব এক হৃদয়বিদারক মাইলফলকে পৌঁছে গেছে।
তিনি বলেন, বিচলিত হওয়ার মতো এই সংখ্যার আড়ালে রয়েছে অনেক চেহারা ও নাম: হাসিগুলো এখন কেবলই স্মৃতি, খাবারের টেবিলের আসনগুলো চিরদিনের জন্য শূন্য আর কক্ষগুলোতে প্রিয়জনদের নীরবতার প্রতিধ্বনি ভেসে আসবে কেবল।
টিকাদান কর্মসূচিতে আরও বৈশ্বিক তহবিল ও সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস। পহেলা এপ্রিল নাগাদ মৃত্যুর এই সংখ্যা বেড়ে ২৯ লাখে পৌঁছাতে পারে। ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশন এমন পূর্বাভাস দিয়েছে।
সংক্রমণের নতুন নতুন ধরনে ভাইরাস কতটা দ্রুত ছড়াচ্ছে; তা হিসাবে নিয়ে আরও খারাপ অবস্থা সামনে অপেক্ষা করছে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বুধবার এক অনুষ্ঠানে সংস্থাটির জরুরি বিষয়ক কর্মকর্তা মাইক রায়ান বলেন, মহামারীর দ্বিতীয় বর্ষের দিকে যাচ্ছি আমরা। সংক্রমণের গতিশীলতা এবং বেশ কিছু ইস্যু মাথায় নিয়ে বলা যায়—এটি আরও কঠিন হয়ে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় তিন লাখ ৮৬ হাজারের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন বিশ্বজুড়ে চারটি মৃত্যুর একটি হচ্ছে বিশ্ব শীর্ষ অর্থনীতির দেশটিতে।
এরপরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশগুলো হলো: ব্রাজিল, ভারত, মেক্সিকো ও যুক্তরাজ্য। অর্থাৎ আক্রান্তের শীর্ষ পাঁচটি দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর পঞ্চাশ শতাংশের জন্য দায়ী। কিন্তু বিশ্ব জনসংখ্যার মাত্র ২৭ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করছে তারা।
বিশ্বের সবচেয়ে খারাপভাবে আক্রান্ত অঞ্চল ইউরোপে ছয় লাখ ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই রোগে। অর্থাৎ করোনায় মোট মৃত্যুর ৩১ শতাংশই এ অঞ্চলটিতে। আর ভারতে মৃত্যুর সংখ্যা এক লাখ ৫১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।